নো বল' নাটক শেষে ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ! ছবি সৌজন্যে : গাজী টিভি
'নো বল' নাটক শেষে ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ!
ছবি সৌজন্যে : গাজী টিভি
বাংলাদেশের সঙ্গে 'নো-বল' ইস্যুটাই কেন যেন বারবার ঘুরে ফিরে আসে। এবার অবশ্য অভিযোগকারী দল বাংলাদেশ নয়; ওয়েস্ট ইন্ডিজ।ওশান থমাসের করা চতুর্থ ওভারের শেষ বলে ক্যাচ তুলে দেন লিটন দাস। নো বল ডাকেন ফিল্ড আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। । কিন্তু বিধ্বংসী মেজাজে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে ফেরানোর জন্য নো বলে আপত্তি করে বসে উইন্ডিজ। রিভিউ নেওয়ার ইঙ্গিত করেন অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট। কিন্তু রিভিউয়ের নিয়ম না থাকায় নতুন নাটক শুরু করে উইন্ডিজ।
খেলা বন্ধ হয়ে যায়। মাঠে আম্পায়ারদ্বয়ের সঙ্গে অনেক বাকবিতণ্ডার পর করে উইন্ডিজ অধিনায়ক ছুটে যান ডাগ আউটে। সেখানে চলে আসেন উইন্ডিজের টিম অফিসিয়াল; টিভি আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি পর্যন্ত! এক পর্যায়ে বাক বিতণ্ডায় যোগ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব।
টিভি রিপ্লেতে বলটিকে অবশ্য নো বল মনে হয়নি। আম্পায়াররা শেষ পর্যন্ত এটাকে নো বল ঘোষণা করলে বেশ ক্ষুব্ধ হয়েই মাঠে ফিরে উইন্ডিজ। সাকিব হাতের ইশারায় 'ফ্রি হিট' দেখিয়ে দেন। ফ্রি হিট পেয়ে ছক্কা মারেন সৌম্য সরকার। কিন্তু টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ।
১০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর অ্যালানের বলে ৯ রান করেই লং অনে কটরেলের তালুবন্দি হন আগের ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা সৌম্য। অধিনায়ক সাকিব উইকেটে এসেই প্রথম বলে অ্যালানকে তুলে মারেন। সেই লং অনে একই ধরনের ক্যাচ নেন কটরেল।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়েছিল বাংলাদেশের। দুই ওপেনার তামিম-লিটন বেশ মেজাজেই ছিলেন। কিন্তু জুটি স্থায়ী হলো না বেশিক্ষণ। থমাসের বলে তিন রান নিতে গিয়ে রান-আউট হয়ে যান তামিম ইকবাল। যদিও কটরেলকে ছক্কা মেরে ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দেশসেরা ওপেনার। ২২ রানে প্রথম উইকেট হারাল বাংলাদেশ।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯.২ ওভারে ১৯০ রানে অল-আউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু তাদের শুরুটা ছিল উন্মাতাল। দুই ওপেনার এভিন লুইস আর শাই হোপের কাছে বেদম পিটুনি খাচ্ছিলেন বাংলদেশের হয়ে বোলিং শুরু করা আবু হায়দার রনি এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। মেহেদী মিরাজও প্রথম ওভারে কিছু করতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত ঝড় থামানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেন অধিনায়ক সাকিব। তার অসাধারণ একটা বলে বোল্ড হয়ে ফিরলেন ১২ বলে ২৩ রান করা শাই হোপ। ভাঙল ৫ ওভারে ৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটি।
গত দুই ম্যাচে নিষ্প্রভ থাকা এভিন লুইস আজ সিরিজ নির্ধারণী মঞ্চে জ্বলে ওঠেন। ১৮ বলে ৩ চার ৫ ছক্কায় তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। এর মধ্যে মিরাজের বলে আবু হায়দারের কল্যাণে জীবন পান তিনি। জ্বলে ওঠার আগেই কিমো পলকে (২) প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান মুস্তাফিজুর রহমান। তার বলে সীমানার কাছ থেকে দারুণ ক্যাচ নেন আরিফুল হক। ৭.১ ওভারেই উইন্ডিজের স্কোর একশ ছাড়িয়ে যায়। দলের প্রয়োজনের সময়ে সবচেয়ে বড় ব্রেক থ্রু এনে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টর্নেডো গতিতে রান তুলতে থাকা এভিন লুইস এবং হার্ডহিটার শিমরন হেটমায়ারকে পরপর দুই বলে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান তিনি।
মাহমুদউল্লাহর বলে বোল্ড হওয়ার আগে লুইস করেছেন ৩৬ বলে ৬ চার ৮ ছক্কায় ৮৯ রান। পরের বলেই এলবিডাব্লিউ হয়ে যান হেটমায়ার (০)। রিভিউ নিয়েও কোনো লাভ হয়নি তাদের। রোভম্যান পাওয়েলকে (২৩) লিটন দাসের তালুবন্দি করে তৃতীয় শিকার ধরেন মাহমুদউল্লাহ। নিকোলাস পুরানকে (২৯) প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠিয়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। কাটার মাস্টারে বলে ছক্কা মারতে গিয়ে থার্ডম্যানে আবু হায়দারের মনে রাখার মতো একটি ক্যাচে পরিণত হন পুরান।
মুস্তাফিজের তৃতীয় শিকার ব্র্যাথওয়েট (৮)। তার বলে মেহেদী মিরাজের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন উইন্ডিজ অধিনায়ক। এরপর জোড়া আঘাত হানেন সাকিব। একই ওভারে ফিরিয়ে দেন অভিষিক্ত রাদারফোর্ড (২) এবং অ্যালানকে (৮)। উইন্ডিজের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন মাহমুদউল্লাহ। লিটন দাসের কাছ থেকে বল পেয়ে তিনি নিজেই রান-আউট করে দেন ওশান থমাসকে (০)। ১৯০ রানে অল-আউট হয় উইন্ডিজ। ৩টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজ, সাকিব এবং মাহমুদউল্লাহ। ২ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে সবচেয়ে খরুচে বোলার উইকেটশূন্য আবু হায়দার।


মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন