রংপুর আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে ২ নারীর মৃত্যু, চিকিৎসাধীন ১৫
রংপুর আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে ২ নারীর মৃত্যু, চিকিৎসাধীন ১৫
ছবি: সংগৃহীত
০৪ জানুয়ারি ২০১৯
রংপুর অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসে জনজীবন একেবারে অচল হয়ে পড়েছে। বিপাকে পড়েছে সহায় সম্বলহীন হতদরিদ্র পরিবারগুলো। শীতবস্ত্র না থাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন তাপাতে গিয়ে পরনের কাপড়ে আগুন লেগে শরীরের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গত ৩ দিনে ২ নারীর মৃত্যু হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে তারা। সেখানে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৫ জন। এদের মধ্যে অন্তত পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
রংপুর অঞ্চলে গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ৭ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। একদিকে প্রচণ্ড শীত, অন্যদিকে কনকনে বাতাস শীতের তীব্রতাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে হাজার হাজার সহায় সম্বলহীন হতদরিদ্র পরিবার। শীত বস্ত্রের অভাবে খড় কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন তারা। বিশেষ করে আগুন পোহানোর সময় অসাবধানতাবশত শাড়ির আঁচলে কিংবা কাপড়ে আগুন ধরে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হচ্ছেন নারী ও শিশুরা।
গত তিন দিনে আগুন পোহানোর সময় অন্তত ২০ জন নারী ও শিশু অগ্নিদগ্ধ হয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে দুই নারী মারা গেছেন। নিহতরা হলেন লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার রাজিয়া বেগম (২৭) এবং একই জেলার আদিতমারীর মোমেনা বেগম (৩২)। অগ্নিদগ্ধ নারী ও শিশুদের আহাজারি আর তাদের স্বজনদের কান্নায় বার্ন ইউনিটে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে শুক্রবার সকালে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে বিছানায় জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সার্জিকাল ওয়ার্ডের বারান্দায় রাখা হয়েছে রোগীদের। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী এলাকার অগ্নিদগ্ধ লাবন্য বেগম জানান, তীব্র শীতের কবল থেকে বাঁচতে ধানের খড় দিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে অসাবধানতাবশত পড়নের ম্যাক্সির পেছনে আগুন লেগে যায়। এতে করে তার কোমরের নিচ থেকে পা পর্যন্ত ঝলসে গেছে বলে জানান তিনি। একই কথা জানালেন রংপুরের মমিনপুর গ্রামের এলাকার জরিনা বেগম। শীতের কারণে আগুন পোহানোর সময় কাপড় পুড়ে গিয়ে দগ্ধ হন তিনি।
এদিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. মারুফুল ইসলাম জানান, ‘শীতের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আগুন পোহানোর সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে গত বছর ১২ জন মারা যান। এবার এ পর্যন্ত ১৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিনই রোগী আসছে। যে হারে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে করে এবছর শীতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ওয়ার্ডে মোট বেড সংখ্যা ২৬টি। অথচ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে ফ্লোরে রাখতে হচ্ছে। রোগীদের বেশির ভাগেরই শরীরের নিচের অংশ ৩০ থেকে ৪০ ভাগ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া প্রয়োজনীয় অনেক ওষুধ সরবরাহ না থাকায় রোগীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। হতদরিদ্র রোগীর স্বজনরা প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে পারছেন না। তার পরেও চেষ্টা করে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।’
ছবি: সংগৃহীত
০৪ জানুয়ারি ২০১৯
রংপুর অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসে জনজীবন একেবারে অচল হয়ে পড়েছে। বিপাকে পড়েছে সহায় সম্বলহীন হতদরিদ্র পরিবারগুলো। শীতবস্ত্র না থাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন তাপাতে গিয়ে পরনের কাপড়ে আগুন লেগে শরীরের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গত ৩ দিনে ২ নারীর মৃত্যু হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে তারা। সেখানে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৫ জন। এদের মধ্যে অন্তত পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
রংপুর অঞ্চলে গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ৭ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। একদিকে প্রচণ্ড শীত, অন্যদিকে কনকনে বাতাস শীতের তীব্রতাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে হাজার হাজার সহায় সম্বলহীন হতদরিদ্র পরিবার। শীত বস্ত্রের অভাবে খড় কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন তারা। বিশেষ করে আগুন পোহানোর সময় অসাবধানতাবশত শাড়ির আঁচলে কিংবা কাপড়ে আগুন ধরে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হচ্ছেন নারী ও শিশুরা।
গত তিন দিনে আগুন পোহানোর সময় অন্তত ২০ জন নারী ও শিশু অগ্নিদগ্ধ হয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে দুই নারী মারা গেছেন। নিহতরা হলেন লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার রাজিয়া বেগম (২৭) এবং একই জেলার আদিতমারীর মোমেনা বেগম (৩২)। অগ্নিদগ্ধ নারী ও শিশুদের আহাজারি আর তাদের স্বজনদের কান্নায় বার্ন ইউনিটে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে শুক্রবার সকালে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে বিছানায় জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সার্জিকাল ওয়ার্ডের বারান্দায় রাখা হয়েছে রোগীদের। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী এলাকার অগ্নিদগ্ধ লাবন্য বেগম জানান, তীব্র শীতের কবল থেকে বাঁচতে ধানের খড় দিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে অসাবধানতাবশত পড়নের ম্যাক্সির পেছনে আগুন লেগে যায়। এতে করে তার কোমরের নিচ থেকে পা পর্যন্ত ঝলসে গেছে বলে জানান তিনি। একই কথা জানালেন রংপুরের মমিনপুর গ্রামের এলাকার জরিনা বেগম। শীতের কারণে আগুন পোহানোর সময় কাপড় পুড়ে গিয়ে দগ্ধ হন তিনি।
এদিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. মারুফুল ইসলাম জানান, ‘শীতের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আগুন পোহানোর সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে গত বছর ১২ জন মারা যান। এবার এ পর্যন্ত ১৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিনই রোগী আসছে। যে হারে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে করে এবছর শীতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ওয়ার্ডে মোট বেড সংখ্যা ২৬টি। অথচ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে ফ্লোরে রাখতে হচ্ছে। রোগীদের বেশির ভাগেরই শরীরের নিচের অংশ ৩০ থেকে ৪০ ভাগ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া প্রয়োজনীয় অনেক ওষুধ সরবরাহ না থাকায় রোগীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। হতদরিদ্র রোগীর স্বজনরা প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে পারছেন না। তার পরেও চেষ্টা করে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।’

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন