শপথ নিলেন ২৮৮ সংসদ সদস্য
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে ২৮৮ জন গতকাল শপথ নিয়েছেন। জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথবাক্য পাঠ করান। এর আগে নিজেই নিজের শপথ নেন স্পিকার।
গতকাল বেলা ১১টায় আয়োজিত এ শপথ অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নিজে শপথ গ্রহণ এবং শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন। স্পিকার শপথবাক্য পাঠ করার পর প্রধানমন্ত্রী দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত অন্য সদস্যরাও তাকে অভিনন্দন জানান। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাতীয় সংসদের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. জাফর আহমেদ খান।
এরপর শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের ২৫৪ জন সংসদ সদস্যকে শপথবাক্য পাঠ করান স্পিকার। পরের ধাপে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির তিনজন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) দুজন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের দুজন, তরীকত ফেডারেশনের একজন, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) একজন এবং স্বতন্ত্র তিনজন সংসদ সদস্যকে শপথবাক্য পাঠ করান। এরপর রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির ২১ জন সংসদ সদস্য শপথ গ্রহণ করেন। শপথ গ্রহণ শেষে সবাই শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
সংসদ সচিবালয় জানায়, নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী নির্বাচিত ২৯৮ জন এমপির মধ্যে ২৮৮ জন শপথ নিয়েছেন। অসুস্থতার কারণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একেএম রহমতউল্লাহ শপথ নিতে পারেননি। বুধবার স্পিকারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে শপথের জন্য সময় চেয়েছেন তারা। আর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের গতকাল বিকালে শপথ গ্রহণের কথা থাকলেও তিনি পরে স্পিকারের কাছে সময় প্রার্থনা করেছেন। দু-একদিনের মধ্যেই তিনি শপথ নেবেন বলে জানিয়েছেন। আর নির্বাচিত হলেও শপথ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাতজন সংসদ সদস্য।
শপথবাক্যে নির্বাচিত এমপিরা আইন মেনে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে দেশের আইনসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করেন। শপথ গ্রহণকালে তারা নিজ নিজ নাম উচ্চারণ করে স্পিকারের সঙ্গে সঙ্গে পড়তে থাকেন ‘সশ্রদ্ধচিত্তে শপথ (বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা) করিতেছি যে, আমি যে কর্তব্যভার গ্রহণ করিতে যাইতেছি, তাহা আইন অনুযায়ী ও বিশ্বস্ততার সহিত পালন করিব; আমি বাংলাদেশের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস ও আনুগত্য পোষণ করিব; এবং সংসদ সদস্যরূপে আমার কর্তব্য পালনকে ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত হইতে দিব না।’
শপথ পাঠ করানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। শপথ অনুষ্ঠানে প্রথম সারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডান পাশে ছিলেন আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আর বাম পাশে ছিলেন সাজেদা চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওবায়দুল কাদের, মোহাম্মদ নাসিম ও আব্দুর রাজ্জাক। আর মাঝে নাজমুল হাসান পাপনের পাশে ছিলেন নতুন দুই সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা ও শেখ তন্ময়। শপথ শেষে জাতীয় সংসদের ভিআইপি ক্যাফেটেরিয়ায় নতুন এমপিদের জন্য ছিল চা-চক্রের আয়োজন। এরপর সংসদ সচিবের দপ্তরে রক্ষিত সংসদ সদস্যদের রেজিস্টার খাতায় তারা স্বাক্ষর করেন।
এদিকে শপথ অনুষ্ঠানকে ঘিরে সংসদ ভবন ও আশপাশ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। সকাল থেকেই ওই এলাকায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারি লক্ষ করা যায়। দর্শনার্থীদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও পুরো সংসদ ভবন ছিল উৎসবের আমেজ। শপথ অনুষ্ঠান সামনে রেখে সংসদ ভবনের অভ্যন্তরসহ আশপাশের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। বাহারি রঙের ফুলের টব সারি সারি বসিয়ে সংসদ ভবনকে নতুন রূপে সাজানো হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী এমপিরা ৯ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করেন। এরপর ২৯ জানুয়ারি বসে সংসদের প্রথম অধিবেশন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ১ জানুয়ারি নির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। নিয়ম অনুযায়ী তিনদিনের মধ্যে নির্বাচিতদের শপথ আয়োজন করার কথা থাকলেও গতকাল তা আয়োজন করে সংসদ সচিবালয়। গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকতে হবে। প্রথম অধিবেশন শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে শপথ না নিলে বা স্পিকারকে অবহিত না করলে সদস্য পদ খারিজ হবে। আর যেদিন অধিবেশন বসবে, সেদিন থেকে একাদশ সংসদের মেয়াদ শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পড়ানোর পর সংসদ অধিবেশন আহ্বান করবেন রাষ্ট্রপতি।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন