হাজার কোটি ডলারের সম্পদ বিক্রির পরিকল্পনা সৌদি আরবের

হাজার কোটি ডলারের সম্পদ বিক্রির পরিকল্পনা সৌদি আরবের ভয়েসমিডিয়া২৪.কম |


১৫ জানুয়ারি ২০১৯

বেসরকারীকরণ কর্মসূচির মাধ্যমে ২০২০ সাল নাগাদ প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে সৌদি সরকারের। এর মধ্যে ইউটিলিটি, ফুটবল ক্লাব, আটাকল ও চিকিৎসা কেন্দ্রের মতো সম্পদ বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে। মূলত তেলের ওপর অর্থনীতির নির্ভরতা হ্রাসে এ পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি আরব। তবে পরিকল্পনা সত্ত্বেও বাস্তবায়নে বিলম্বের মুখোমুখি হচ্ছে দেশটি। প্রক্রিয়া শুরু দীর্ঘায়িত হতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষত রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি সৌদি আরামকোর আইপিও ছাড়ায় বেশ পিছিয়ে পড়েছে দেশটি। খবর ব্লুমবার্গ।

সৌদি পরিকল্পনা নিয়ে ন্যাশনাল সেন্টার ফর প্রাইভেটাইজেশন অ্যান্ড পিপিপি (এনসিপি) জানিয়েছে, উদ্যোগগুলোর বর্তমান অবস্থা এবং বেসরকারীকরণ সুপারভাইজরি কমিটির অগ্রগতি দেখে বলা যায়, সবগুলো লক্ষ্যই পূরণযোগ্য। সিংহভাগ ক্ষেত্রে অগ্রগতি সময়সূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে। উল্লেখ্য, আরামকো ও স্টক এক্সচেঞ্জের মতো কিছু নির্দিষ্ট চুক্তি বাদে অধিকাংশ সম্পদ বিক্রির তত্ত্বাবধান করছে এনসিপি।
তবে সৌদি পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়ে ততটা আশাবাদী নন বিশ্লেষকরা। দুবাইভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান লাইটহাউজ রিসার্চের প্রধান গবেষক জঁ-পল পিয়াজেঁ বলেন, বেসরকারীকরণ প্রক্রিয়া সৌদি আরবের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার এজেন্ডাগুলোর একটি, যা সবসময়ই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে এবং বারবার একই ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের তুলনায় ২০১৯ সালের শুরুতে সামষ্টিক বা আর্থিক বাজার পরিস্থিতি অন্তত চলতি বছর বেসরকারীকরণ ত্বরান্বিত হওয়ার কোনো আভাস দিচ্ছে না।
চলতি বছর সৌদি সরকার চারটি আটাকল কোম্পানি ও সৌদি মেডিকেল সার্ভিসেস কেন্দ্রের মালিকানা বিক্রি সম্পন্নে পরিকল্পনা করেছে বলে এনসিপি জানিয়েছে। এর বাইরে সৌদি আরবের বৃহত্তম বেসরকারীকরণ কর্মসূচি ও উদ্যোগগুলোর পরিস্থিতি হচ্ছে:
সৌদি আরামকো: ২০১৬ সালে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি সৌদি আরামকোর শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেন, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় আইপিও হতে যাচ্ছে। কিন্তু কোম্পানিটির আইপিও বিক্রি ২০১৮ সাল থেকে পিছিয়ে ২০২০ সালের শেষ বা ২০২১ সালের শুরুর দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যাতে আরামকো ৭ হাজার কোটি ডলারে দেশটির বৃহত্তম পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি সাবিকের মালিকানা নিতে পারে।
স্টক এক্সচেঞ্জ: ২০১৪ সালে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম স্টক এক্সচেঞ্জ তাদাউল আইপিও ছাড়ার ঘোষণা দেয়। এজন্য ২০১৬ সালে এইচএসবিসি হোল্ডিংসকে ফিন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজর নিয়োগ করা হয়। গত বছর আইপিও ছাড়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে চলতি বছরে নিয়ে আসা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
রিয়াদ বিমানবন্দর: কিং খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আংশিক মালিকানা বিক্রির কথা থাকলেও সেপ্টেম্বরে তা মুলতবি করা হয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্র: পূর্ব উপকূলে অবস্থিত ৭২০ কোটি ডলারে রাস আল খাইর বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিক্রি ২০২০ সাল নাগাদ সম্পন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে। চুক্তিটির উপদেষ্টা হিসেবে ২০১৭ সালে বিএনপি পারিবাসকে নিয়োগ দেয়া হয়।
ফুটবল ক্লাব: ২০১৬ সালে ফুটবল ক্লাবগুলো বেসরকারীকরণের পরিকল্পনা শুরু হয়। ২০২০ সাল নাগাদ ক্লাবগুলো বিক্রির ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত বড় কোনো প্রতিবন্ধকতা দেখা যাচ্ছে না বলে এনসিপি জানিয়েছে।

মন্তব্যসমূহ